কবিতা

Saturday, August 22, 2020

কবিতা

 

 হবে এক শোষিতের পরিচয় 

                    — সুজন মন্ডল 

...................................................................


মানুষে'র মতো দেখতে, হিংস্র হায়না'র দেশে—

দেদার সে চালাচ্ছে আপস, বাংলা কবিতাটা!

মানুষ মরে মরুক, মানবিকতা ভেসে যাক—

তবু যাবে না আঁকা, শোষণে'র ছবিটা...!

.

অথচ এখনো বিক্রি হয়নি, কিছু সশস্ত্র পংক্তি...! 

মৌনতা ভেঙে অর্তকিতে জাগে, প্রেমের কবিতায়—

খুলে দেয়, 'উদ্বাস্তুময় বাচিকে'র রুদ্ধ কণ্ঠ...!'

গণ বিক্ষোভে'র সুর তোলে, বাউলে'র একতারায় ।


আজকে কিছু কবিতা খুলছে মুখ, হয়তো বাংলা নয়!

সর্বস্বান্ত মানুষের মতোই, হবে এক শোষিতের পরিচয়...


Tuesday, July 14, 2020

কবিতা

আমি ভারভারা রাও বলছি,
                      —— সুজন মন্ডল 
...............................................................

শোনো
আমি ভারভারা রাও বলছি,
এখনও সময় আছে মুক্ত কর, 
শুয়োরের এই খোঁয়াড় থেকে!
হয়তো তোমরা এখন কোন মতে, 
আটকে রেখেছ আমাকে—
কিন্তু, 
কিন্তু আমার চে-ত-না-কে পারোনি...
পারোনি বলেই লোরকা, চে, নেরুদা, 
নাজিম হিকমতের মতোই 
আমার কাব্যিক চেতনাও আজ 
একজন, দুজন করে হাজার-হাজার কবি-শিল্পী, 
ছাত্র-যুবা, চাষি-মজুরের ভেতরে ছড়িয়ে পড়ছে—
জেগে উঠছে তাঁদের মধ্যেই 
আমার 'বিদ্রোহী' সত্তার তেজ!

শোনো
আমি ভারভারা রাও বলছি,
এখনও সময় আছে মুক্ত কর, 
শুয়োরের এই খোঁয়াড় থেকে!
নয়তো,
আমার এক একটি কবিতার পংক্তি গুলো
জেগে উঠলে 'পরে...
তখন, 
তখন কি পারবে সামলাতে?

-----------------------------------------------------------------------
                      সুজনের কলম....


Monday, July 13, 2020

কবিতা



মাত্র কয়েকটা গুলি!
                    -- সুজন মন্ডল 
.............................................................

বাহ্,
সাবাস রাষ্ট্র, সাব্বাস!
মাত্র কয়েকটা গুলি খরচ করেই;
কত সহজেই ঘুম পাড়িয়ে দিলে, 
অজস্র প্রশ্নের চোখকে—
কত সহজেই কবর দিয়ে দিলে; 
রাজকীয় সন্ত্রাসের জঘণ্যতম ইতিহাস...

বাহ্,
সাবাস রাষ্ট্র, সাব্বাস!
মাত্র কয়েকটা গুলি খরচ করেই;
কত সহজেই পরিশুদ্ধ হয়ে উঠলে—
কত সহজেই মহা মানব হয়ে উঠলে...
অথচ,
অথচ ক্ষমতার মসনদে বসে বিস্মৃত হয়েছ!
যে কিছু বিক্ষুব্ধ ইঁদুরও  একদিন কবরে ঢুকে :
তুলে আনতে পারে চাপা পড়ে থাকা,
তোমাদের ঐ নৃশংসতার উপন্যাস...



Wednesday, June 24, 2020

কবিতা

চিৎকারে, বলে যেতে চাই...
                      — সুজন মন্ডল 
.............................................................

আজ, 
মরার আগে চিৎকার করে বলে যেতে চাই...
এ জীবনের শেষতম ইচ্ছের কথা—
এ জীবনের শেষতম স্বপ্নের কথা...
বলে যেতে চাই,
এ বুকে লালিত অব্যক্ত যন্ত্রণার ইতিহাস—
বলে যেতে চাই,
বেকারত্বের এক একটি জঘণ্যতম দীর্ঘশ্বাস...

হ্যাঁ, 
আজ মরার আগে চিৎকার করে বলে যেতে চাই...
সমুদ্রের অশান্ত ঢেউয়ের মতোই, 
নাগরিক আকাশের বুকে ধাক্কা মেরে বলে যেতে চাই :
আমার এই মৃত্যুর জন্য!
একমাত্র দায়ী তোমাদের নির্মম শোষণের যুদ্ধ—
যে যুদ্ধে বারে বারে হেরে গেছি আমি...
কখনও ক্ষমতার দাপটে, কখনও বা অর্থের ঝলকানিতে!

আজ 
মরার আগে চিৎকার করে বলে যেতে চাই...
যখনই আমি ভাত চেয়েছি, তখনই তুমি দিয়েছ জাতের যুদ্ধ-
যখনই আমি কাজ চেয়েছি, তখনই তুমি দিয়েছ ভাষার যুদ্ধ-
যখনই আমি বাঁচতে চেয়েছি, তখনই তুমি দিয়েছ ধর্মের যুদ্ধ-
শুধু যুদ্ধ আর যুদ্ধই দিয়েছ...
কখনও একবারের জন্য হলেও মুখ ফস্কে বলোনি! 
এ যুদ্ধ হোক ভাতের জন্য,
এ যুদ্ধ হোক বেঁচে থাকার জন্য,
এ যুদ্ধ হোক নতুন সভ্যতা গড়ার জন্য!
উল্টে তোমাদের এই যুদ্ধের জন্য
আমার বাবা ফসলের দাম না পেয়ে আত্মহত্যা করেছে!
তোমাদের এই যুদ্ধের জন্য
আমার ছোট ভাই, বুকের রক্ত ঢেলে শহীদের উপাধি পেয়েছে!
তোমাদের এই যুদ্ধের জন্য
আমার দুঃখিনী মা, কেঁদে কেঁদে পাগল হয়ে গেছে!

হ্যাঁ
আজ মরার আগে চিৎকার করে বলে যেতে চাই...
বলে যেতে চাই
তোমাদের এই শয়তানী যুদ্ধের খেলা ধ্বংস হোক
তোমাদের এই মুনাফার সমস্ত ইমারত ধ্বংস হোক
তোমাদের এই শোষণবংশে শাসিত পৃথিবী ধ্বংস হোক...
ধ্বংস হোক,
ধ্বংস হোক...
ধ্বংস...


Tuesday, June 23, 2020

কবিতা

পূর্ণ গ্ৰাসের আগে 
               — সুজন মন্ডল 
--------------------------------------------------------------------

বাবা, তুমি কেমন আছো?
আমি ভালো নেই—
          সময়ের এই রূপ দেখে আমার খুব ভয় করছে!
          প্রচন্ড ভয় করছে...
এখন আর আগের মতোন হাসিনা,খেলিনা,ঘুরিনা—
এখন কারোও সাথে মন খুলে কথা বলি না!
               এমনকি কোন গল্পও করি না...
               এখন তো ঘরের ভিতরে বসে থাকি, 
শুধুই বসে থাকি!
আর জানালার ওপারে নীল আকাশের দিকে
     অধীরার মতো পাথুরে চোখে তাকিয়ে দেখি!
     সূর্য উঠছে, তারারা খেলছে, মাঝেমাঝে বৃষ্টিও পড়ছে ।

কিন্তু, জানো বাবা, আমি বেকার, গৃহশিক্ষক বলে!
মধ্যাহ্নের কোন সূর্য আসে না আমার কাছে—
          মধ্যরাতের কোন তারা আসে না আমার কাছে—
          এমনকি বৃষ্টিরাও আসে না আমার কাছে—
এখন কেউ খেলে না আমার সাথে,
এখন কেউ কথা বলে না আমার সাথে!
         আর এভাবেই কেঁটে যায় দিন রাত একাকী :
        আলোহীন, বাতাসহীন, শূন্য এই বৃত্তের ভেতরে—

বাবা,
বাবা আমি এতটুকুও ভালো নেই!
      বীভৎস এক অন্ধকার গ্ৰাস করেছে অর্ধেক আয়ু—
         তুমি পারো তো আলো নিয়ে এসো :
সম্পূর্ণ গ্ৰাস করার আগেই,
সম্পূর্ণ গ্ৰাস করার আগেই,
              সম্পূর্ণ গ্ৰাস করার আগেই....

Thursday, June 18, 2020

কবিতা

ম্যাক্সিম গোর্কি স্মরণে...
----------------------------- সুজন মন্ডল 

গোর্কি, 
আপনার কথা যখনই ভাবি, 
তখনই হৃদয়ে ভেসে ওঠে :
একটি মমতাময়ী মুখের ছবি!
যে ছবিতে অনন্য শিল্পের কারুকার্যে, 
একটু একটু করে দিয়েছেন বিপ্লবের রঙ—
অথচ, 
দেখেছি আমি সেই ছবিই আজও :
দেশে দেশে ঘুরছে—
যেমন আমাদের দেশে শাহিনবাগের দেওয়ালে 
ঝুলে আছে—

গোর্কি, 
আপনিই পেরেছিলেন একমাত্র, 
পুরুষের পৃথিবীতে :
মা-এর এক জীবন্ত মূর্তি গড়তে—
যে মা, 
স্বামীর ছোট্ট উঠান পেরিয়ে সমগ্ৰ পৃথিবীকে :
জড়িয়ে ধরেছে, দিয়েছে বুক নিংড়ে ভালোবাসা—
অথচ, 
আমরা তাঁর যোগ্যতম সন্তান হতে পারিনি—
পারিনি মুছে দিতে আজও সেই মা-এর, 
চোখের কোনে লেগে থাকা : 
শোষণের বীভৎস দাগ—
ব্যক্তিগত কিছু আরাম আয়েশের খাতিরে...

গোর্কি,
আজ আপনার পুনঃ জন্মই পারে!
লিখতে আবার 'মা'-এর মতোন করে
 মদপ্য পিতার বিপ্লবের মানুষ, হয়ে ওঠার :
অনন্য আত্মজীবনী—
এমনকি,
আপনিই পারেন আজ চোখের সামনে,
এতগুলো মানুষের মৃত্যুতে :
নিষ্ক্রিয় থাকা উত্তরাধিকারদের—
কষাতে দু-গালে, সজোরে ঘৃণার খাপ্পড়!
তাতে যদি সামান্যতম হলেও নড়ে ওঠে :
এতদিনের ঘুমিয়ে থাকা মানবিকতা...

গোর্কি,
আপনাকে জানাই হৃদয় হতে রক্তিম অভিবাদন ।
কেননা, 
আপনিই তো প্রথম সম্পূর্ণ মার্ক্সীয় চেতনায়,
রক্তিম কলমের কালিতে, লিখে দিয়েছিলেন : 
শোষকের বুকে কাঁপন ধরানো, পথের হদিস—
এমনকি,
জাগিয়ে তুলেছিলেন মহামতি লেনিনের অনুপ্রেরণায় :
ক্ষুধা, দারিদ্র্য ধ্বংসের : অমোঘ মন্ত্র...

Sunday, June 14, 2020

কবিতা




কবিতা :  মৃত্যু
                   — সুজন মন্ডল
................................................................

মৃত্যু, মৃত্যু, মৃত্যু
চারিদিকে যেন শুধুই বীভৎস মৃত্যুর মহামিছিল—
                কোথাও কি কোন জীবন নেই,
                কোথাও কি কোন স্পন্দন নেই!
এই মৃত্যুই কি এখন 
নববর্ষের এক একটি শোকবার্তা!
                এই মৃত্যুই কি এখন 
               'দেশে' প্রকাশিত কোন কবির কবিতা—

মৃত্যু, মৃত্যু, মৃত্যু
চারিদিকে যেন শুধুই নির্লজ্জ মৃত্যুর মহামিছিল...
               অথচ,
              ''এই মৃত্যু কি একুশ শতকে কাম্য ছিল?''
              না, না, না... 
 
মৃত্যু আজ যতই 
কেড়ে নিক আমাদের প্রিয়তমার প্রাণ—
                   তবুও,
                   তবুও জীবনের স্বল্পায়ুতে গড়ে তোলা :
অনন্য স্থাপত্যের ভেতরে বেঁচে থাকবে চিরকাল...
বেঁচে থাকবে চিরকাল,
                  বেঁচে থাকবে চিরকাল,
                  বেঁচে থাকবে চিরকাল...

Saturday, June 13, 2020

কবিতা

একদিন
        — সুজন মন্ডল
.................................................................

ঝড়ে উড়ে গেছে চাল, 
'কারখানায়' পড়েছে  মস্ত তালা!
               তবুও, 
              তবুও পেট মানেনিকো কোন বন্দিশালা ।
তার 'পর পরিযায়ী হিটলার এসেছে দ্যাখো,
বিদ্যাসাগরের দেশে এলইডি স্ক্রিনে!
          মানবতাকে আজ :
          পিষে মেরে, ভোটের অঙ্ক তুলে আনে—
 
আমরা তো শুধু একেকটি সংখ্যা 
রাষ্ট্রের অভিধানে—
             মরলে পরেও 
             কোন ক্ষতি নেই, নতুন সংখ্যা জন্ম নেবে!

নির্বাচনী ইশতেহার ঘেঁটে ঘেঁটে বুঝেছি, 
কারা আজ শুধু ঠকায়—
             এই 'মারী মড়কের' দেশে আমরা যে :
             এখনও ভীষণ অসহায়!
তাই ধর্মের আবেগে, 
রক্ত ঝরিয়ে, দেশজ বেনিয়া, হাসতে হাসতেই!
      জাকিয়ে বসছে দেখো বারেবারে ক্ষমতার কুর্সিতে—
      বারেবারে ক্ষমতার কুর্সিতে...

কিন্তু, মনে রেখো,
এই অসহায় জাতিরাই একদিন!
           একবিংশের এ মহা-দুর্ভিক্ষ ছিঁড়ে—
           আনবে, আনবে বেঁচে থাকার সু-দি-ন...



Tuesday, June 9, 2020

কবিতা

হ্যাঁ আমরা কমরেড
                     — সুজন মন্ডল 
....................................................................

হ্যাঁ আমরা কমরেড, 
হ্যাঁ আমরা মুষ্ঠিবদ্ধ হাতে লাল সেলাম কমরেডস বলেছি!
হ্যাঁ আমরা কমরেড, 
হ্যাঁ আমরা মারণ ব্যাধি ক্ষুধা ধ্বংসের মহামিছিলে হেঁটেছি!
হ্যাঁ আমরা কমরেড, 
হ্যাঁ আমরা নির্মম শোষণের বিরুদ্ধে বিপ্লবের কবিতা লিখেছি!
হ্যাঁ আমরা কমরেড, 
হ্যাঁ আমরা ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরি জাগাতে, বিদ্রোহের গান গেয়েছি!
হ্যাঁ আমরা কমরেড, 
হ্যাঁ আমরা পুঁজির লোভ আর ফ্যাসিবাদ ধ্বংসের শ্লোগান তুলেছি!
হ্যাঁ আমরা কমরেড, 
হ্যাঁ আমরা মানুষের মতন স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার দাবি করেছি!
হ্যাঁ আমরা কমরেড, 
হ্যাঁ আমরা ধর্মান্ধ, মৌলবাদী মানসিকতাকে উপড়াতে চেয়েছি! 
হ্যাঁ আমরা কমরেড, 
হ্যাঁ আমরা বেকারত্বের অবসান ঘটিয়ে শান্তিতে বাঁচতে চেয়েছি!
হ্যাঁ আমরা কমরেড, 
হ্যাঁ আমরা ঘরে বাইরে মা-বোনদের নিরাপত্তার দাবী তুলেছি!
হ্যাঁ আমরা কমরেড, 
হ্যাঁ আমরা নাথুরামকে ধিক্কার আর ক্ষুদিরামকে ভালোবেসেছি!
হ্যাঁ আমরা কমরেড, 
হ্যাঁ আমরা হিটলারকে শত্রু আর স্ট্যালিনকে মসীহা বানিয়েছি!
হ্যাঁ আমরা কমরেড, 
হ্যাঁ আমরা খুনী,জালিম রাষ্ট্রকে লাথি মেরে ভাঙতে চেয়েছি!
হ্যাঁ আমরা কমরেড, 
হ্যাঁ আমরা ছাত্র-যুবা, শিল্পী-কবি, চাষি-মজুরের ব্যারিকেড গড়েছি!
হ্যাঁ আমরা কমরেড, 
হ্যাঁ আমরা নতুন করে এই পৃথিবীকে আবার সাজাতে চেয়েছি!
হ্যাঁ আমরা কমরেড, 
হ্যাঁ আমরা মার্ক্স,এঙ্গেলস, লেনিন,স্ট্যালিন,
মাওসেতুং,কমঃ শিবদাস ঘোষকে ভালোবেসেছি!
হ্যাঁ আমরা কমরেড, 
হ্যাঁ আমরা আজ মুক্তকণ্ঠে লাল সেলাম কমরেডস বলেছি!
হ্যাঁ আমরা কমরেড,
হ্যাঁ আমরাই মৃত্যুর শেষ নিঃশ্বাসেও জানিয়ে যাবো :
লাল সেলাম কমরেডস,
লাল সেলাম কমরেডস,
লাল সেলাম কমরেডস...


Sunday, June 7, 2020

কবিতা




আসবে আবার ফিরে
                — সুজন মন্ডল 
................................................................

আজ আমাদের প্রিয়তম রাষ্ট্র হাড়ে হাড়ে বুঝিয়ে দিচ্ছে
'কোনও সভ্যতার নয়, বর্বরতার মহান সেবক আমি—'
'শাহিনবাগী' মায়ের ভ্রুণ অন্ধ কুঠুরিতে বন্দি রেখে!
বুটের তলায় পিষে, উল্লাসে জানাবে আমরাই ভূস্বামী ।

ধরছে, বাঁধছে, পুরছে স্বাধীন ভারতের সেলুলার'এ
মোস্ট ওয়ান্টেড,রক্তে মিশেছে যাদের ভলগার স্রোত ।
ভাঙছে,কাটছে,ছিঁড়ছে,পোড়াচ্ছে বিপ্লবী সব ইস্তেহার!
উপড়ে ফেলছে উচ্চারিত,যত বিরুদ্ধ আগুনের শ্লোক ।

আজ যতই আমাদের সংহতি উড়াও পিস্তলবোমায়!
জাতির রক্তেভেজা ভয়ার্ত দিল্লি, যতই টাঙাও ঘরেঘরে
তবুও, এযুগের লাখো লাখো ভগৎসিং,সুভাষ বোসরাই
মার্ক্স-লেনিনকে হৃদয়ঙ্গম করেই আসবে আবার ফিরে ।

                 --------------------------------------------------

Thursday, June 4, 2020

কবিতা




নজরুল স্মরণে 
                  — সুজন মন্ডল 
..............................................................

আজ এখানে
আমরা সকলেই সমবেত হয়েছি 
সমবেত প্রিয়তম কবি নজরুলের জন্মজয়ন্তীতে—
                    তাই, কেউ এসেছে ফুলের মালা হাতে,
                   কেউবা এসেছে গরম গরম বক্তৃতা দিতে!
আবার কেউ এসেছে হোয়াটসঅ্যাপ-ফেসবুকে :
লেটেস্ট স্ট্যাটাস আপডেট দিতে—

অথচ,
অথচ, বিশ্বমানবতার মর্মান্তিক মৃত্যু দেখে!
জেগে ওঠা সেই আগুনের প্রাণপুরুষকে—
               অন্ততঃ 
               একবারের জন্য হলেও :
               মুখে নয়, বুকে জড়িয়ে ধরতে কেউই আসিনি...

হয়তোবা 
এখনও কেউ নির্লজ্জের মতন এখানে সমবেত হয়নি!
হয়তোবা সে, এই আনুষ্ঠানিকতার মঞ্চকে লাথি মেরে—
                            কোথাও ঘরের কোনে নীরবে পড়ছে : 
                            'দুখু মিয়ার আত্মজীবনী...'





  

Wednesday, June 3, 2020

কবিতা

      

ধিক্কার
       — সুজন মন্ডল 
...............................................
 


ধিক্কার 
     —— সুজন মন্ডল
.........................................

আজ, 
ঐ হাতিটাকে মেরে, বুঝিয়ে দিলে— 
        তুমি আসলে, মানবতার মুখোশে :
        একজন হিংস্র জানোয়ার!
তাই, আমার বুকের জমানো ঘৃণায়!
ছুড়ে দিলাম তোমার চোখে মুখে—
        ধিক্কার, ধিক্কার, ধিক্কার...

Monday, June 1, 2020

কবিতা

 



 আগুন কিন্তু আগুনের জন্ম দেয়
                          —— সুজন মন্ডল 
.................................................................

দেখেছ ভারতবর্ষ!
আজ একটা মৃত্যুতে কীভাবে জ্বলছে
সাম্রাজ্যবাদের শিরোমণির বুকের ভেতরে :
ভিয়েতনামের মতন আগুনের লেলিহান শিখা—
ভারতবর্ষ দেখো, 
কীভাবে জ্বলে উঠতে হয় মানবতার মৃত্যুতে—
ভারতবর্ষ শেখো, 
কীভাবে কাঁপিয়ে দিতে হয় স্বৈরাচারী রাষ্ট্রের বুক!

দেখেছ ভারতবর্ষ!
আজ একটা মৃত্যুতে কীভাবে জেগে উঠেছে,
শয়ে শয়ে মার্কিনী সূর্য—
অথচ, 
ভারতবর্ষ, তোমার বুকে গৌরী, আখলাক, কালবার্গি,
তবরেজরা নির্বিচারে লুটিয়ে পড়লে—
তখন তুমি কান কাটা বিবেকের মতন নিশ্চুপ থাকো—
নইতো নির্মমভাবে পিটিয়ে মারো :
জাতির মৃত্যুতে জেগে ওঠা "মানুষের মশাল..."

দেখেছ ভারতবর্ষ!
সারা বিশ্বকে শাসন করার শক্তিও :
আজ কীভাবে বাঙ্কারের ভেতরে লুকিয়েছে মুখ!
একটি যৌথবদ্ধ আগুনের ফুৎকারে—
সাবধান ভারতবর্ষ,
ভুলেও আর কখনও কোন দাঙ্গার আগুন জ্বেলোনা!
আগুন কিন্তু আগুনের জন্ম দেয়...


Thursday, May 28, 2020

কবিতা

 


   ভারতবর্ষের মা
               — সুজন মন্ডল 
............................................................

কেউ শুনছ,
আমি যে ভারতবর্ষের মা বলছি,
মা-আ...
দ্যাখো আমার চোখে কত নদী ভাঙছে—
মুখে ফাটছে কত সাগরের গর্জন!
আমার নরম বুকের উপরে দৌড়াচ্ছে দ্যাখো
ক্ষুধা আর মহামারীর বীর্যে জন্মানো মৃত্যুর কাঁকড়া :
যেন অনবরত ছিঁড়ে খাচ্ছে আমার ছেলেমেয়েদের—

না, না, না
তোমরা ওভাবে ধুয়ে দিও না...
ট্রেনে পিষে যাওয়া, আমার সন্তানের রক্তে ভেজা বেদি!
ভুলেও অবেলায় ডেকোনা, আমার 'ইয়াকুবের বন্ধুকে—'
হাঁটতে হাঁটতে ওঁরা যে আজ বড়ই ক্লান্ত...

একি করছ,
না, না, না তোমরা আজ আর একদম বাইরে যেওনা!
শুনো নি তোমরা, আমার হতভাগিনী মেয়ে আজ
খোলা রাস্তার বিছানায় করেছে প্রসব :
মানবতার লজ্জা!

কেউ শুনছ,
আমি যে ভারতবর্ষের মা বলছি,
মা-আ...
দ্যাখো, 
আমার এক একটি জোয়ান ছেলে চলে যাচ্ছে—
আমার বুকটা যে জলহীন মাটির মতন ফেটে যাচ্ছে!
তবুও, আমাদের বিদ্যাসাগর, নেতাজি, নজরুল,
বিবেকানন্দরা আজ আর তেমন করে জেগে ওঠে না...

কেউ শুনছ,
আমি যে ভারতবর্ষের মা বলছি,
মা-আ...
আমি যে আজ স্বামী হারিয়ে, ছেলে খুইয়ে, 
মেয়েকে ভাসিয়ে—
সম্পুর্ন উলঙ্গ হয়ে ঘুরছি!

এখন তোমাদের মধ্যে কেউ আসুক, 
অন্ততঃ 
এ জমাট বাঁধা বিবেকের চোখে আটকে থাকা, 
লজ্জার পতাকা খুলে!
আমাকে পড়িয়ে যাও, পড়িয়ে যাও...


Monday, May 18, 2020

কবিতা

ছাড়পত্র
        — সুজন মন্ডল 
..............................................................

আজ আমাদের সারা শরীর,
জ্বলে যাচ্ছে;
জ্বলে যাচ্ছে আমাদের সারা শরীর । 
                 তবে, কোন রোগে নয়,                
                শোকে নয়!
জ্বলে যাচ্ছে আগুনে পোড়া ক্ষতের মতন রাগে!
এই নির্লজ্জ রাষ্ট্রের :
          নজীরবিহীন ইতরামি দেখে—

এখন  মনে হচ্ছে,
নিজেই নিজের গালে, সপাটে চড় কষিয়ে দিই!
আমরাই তো সেদিন, 
            হাসতে হাসতে গণতন্ত্রের 
            লোক দেখানো উৎসবের মঞ্চে—
ঐ খুনি জালিমের হাতে!
তুলে দিয়েছি;
আমাদেরই পেটে লাথি মারার বীভৎস ছাড়পত্র...

Sunday, May 3, 2020















পৃথিবী
                       —সুজন মন্ডল
.................................................................

আজ আমাদের এতদিনের চেনা পৃথিবীতে
আজ আমাদের এতদিনের ভালোবাসার পৃথিবীতে
               প্রকৃতি নয়, কোন এক ইতরে'র কুকর্মে :
               জন্ম নিয়েছে 'করোনা' নামক এক দস্যু—
যার সামান্যতম হাঁচি, কাশি,
এমনকি হাতের স্পর্শেই—
             শিশুর হাসির মতোন উজ্জ্বল পৃথিবী
             অনবরত পরিবর্তীত হচ্ছে মৃত্যু নগরীতে...


আজ আমাদের প্রিয়তম পৃথিবীতে
মেঘ ভাঙা বৃষ্টির মতোই ঝরছে লাশের উন্নয়ন—
                    অথচ, আমরা, বাঁচতে এবং বাঁচাতে—
                   কোন এক মাতাল রাষ্ট্রের আহ্বানে :
একান্ত বিশ্বাসে'ই বাজিয়ে ছিলাম,
কাঁসর, ঘন্টা, শঙ্খ...
                    জ্বালিয়ে ছিলাম, প্রতিটি ঘরে ঘরে
                   প্রদীপ, মোমের পুতুল...
করেছিলাম প্রতিটি রাস্তার মোড়ে মোড়ে :
নগর সংকীর্তন...
                  তবুও,
                  বিজ্ঞানে'ই রেখে ছিলাম শেষ ভরসা...

অথচ, দেখেছি আজ মানবতার এই দূর্দশা দেখেও—
প্রিয়তম রাষ্ট্রও করেছে ছলনা : পুষ্পবৃষ্টিতে!
এমনকি দেখেছি,
আমাদের পৃথিবীতে 'ঈশ্বর' নামক কোন যোদ্ধা নেই!
                     নেই কোন চক্রধারী...
                     যে এই একবিংশের 'মারণ দূতকে' :
                     করবে ছিন্নভিন্ন...
আজ আমাদের মৃত্যুময় পৃথিবীতে
রূপকথার কোন ঈশ্বর নয়,
                     এসেছে জীবন বাজি রেখেই
                     রক্তে মাংসের কিছু মানবিক চরিত্র—
যাঁরা মায়া, মমতা, ভালোবাসা দিয়েই,
করে যাচ্ছে রোগে বিধ্বস্ত পৃথিবীর সেবা—
                    এমনকি, বলে যাচ্ছে জীবন দিয়েই—
                    আমরা কোন কসাই টসাই নই!
আমরা হলাম মানুষের রোগমুক্তির এক জীবন্ত ঈশ্বর...

আজ আমাদের মহামারীময় পৃথিবীতে
রোগে, শোকে, খিদে'ই আক্রান্ত মানুষের পাশে...
            বন্যার জলের মতো ধেয়ে এসেছে
            অসংখ্য মানবতাবাদী : ছাত্র-যুবা, শিল্পী, কবি—
রেখে যাচ্ছে এই সময়ের দিনগুলিতে :
ভালোবাসার অক্ষরে মানবতার স্বাক্ষর—



Saturday, May 2, 2020





বিবেক হত্যাকারী
                           — সুজন মন্ডল


এই লকডাউনের দিনগুলি যেন!
              বিশ্বযুদ্ধের, শ্বাসরোধকারী :
              একেকটি মুহূর্তের, রক্তাক্ত কবিতা—
যে কবিতার ভেতরে অনবরত :
এগিয়ে চলেছে, লাশের মহামিছিল—

এই লকডাউনের  দিনগুলি যেন!
               দ্বিগুণ গতিতে উৎপাদন করছে!
               হা-হাভাতে রাক্ষসের পাল—
এদিকে পা'এ হাঁটিয়ে'ই মেরে ফেলছে !
ঘরহীন, খাদ্যহীন, নিস্পাপ পরিযায়ী পাখির!
               ন্যাংটা ছানার, পুঁই ডাঁটার মতোন :
               লকলকে শরীর—

এই লকডাউনের দিনগুলিতে!
            আমার সমগ্ৰ শিল্পীসত্তা যদি!
            চামড়ায় মোড়ানো কঙ্কালের—
দুনিয়া কাঁপানো আর্তনাদ শুনেও;
এতটুকুও কেঁদে না উঠে!
              তাহলে আমি শিল্পী হয়েও,
              মানবতাবিরোধী, বিবেক হত্যাকারী...



Sunday, April 26, 2020









ও ডাক্তার
                    —— সুজন মন্ডল

ও ডাক্তার, তুমি আজ জীবন দিয়েই!
মুছে দিলে, নামের আগে লেগে থাকা :
                  'কসাই' নামক বীভৎস শব্দের গন্ধ,
                  'লুঠেরা' নামক জঘণ্যতম উপাধি!
পরিবর্তে শুনিয়ে গেলে—
রোগগ্রস্ত পৃথিবীর কানে!
                  আমি কোন দানব-টানব নই,
                  আমি হলাম 'জীবন্ত ঈশ্বর'—

ও ডাক্তার, তুমি আজ জীবন দিয়েই!
নির্মম এক সত্যকে দিলে প্রতিষ্ঠা—
                          বুঝিয়ে দিলে এখনকার;
                          হাসপাতালগুলো!
মৃত্যুর ছাড়পত্র প্রকাশের :
অন্যতম ছাপাখানা—
                তবুও, এই ছাপাখানার ভেতর থেকেও :
                প্রকাশিত হয় 'জীবন' নামক কিছু কবিতাও—

ও ডাক্তার, তুমি আজ জীবন দিয়েই!
বোজাতে চেয়েছ মৃত্যুর কূপ—
               হয়তো পারোনি, নিজস্ব কিছু সীমাবদ্ধতায়!
               কিংবা রাষ্ট্রের চরম উদাসীনতার জন্যেও...
কিন্তু, তুমি যেখানেই থাকো হতাশ হইওনা!
কেননা তোমার সহযোদ্ধারা এখনও :
                                 লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে—
                                 তাঁরা বিজয়ী হবেই...

(যে বীর ডাঃ মারা গেলেন তাঁর স্মৃতির উদ্দেশ্যে নিবেদিত)


Friday, April 24, 2020



সর্বহারার মহাননেতা কমরেড শিবদাস ঘোষের উদ্দেশ্যে...


             আজও তাঁর চোখে
                               — সুজন মন্ডল

আজও তাঁর চোখে,
নক্ষত্রপুঞ্জের মতোন জ্বলজ্বল করছে!
দরিদ্রতম ভারতবর্ষের পেট চিরে :
দুমুঠো ভাতের গন্ধ, খুঁজে পাওয়ার অমোঘ মন্ত্র...

যে মন্ত্র
চিন রাশিয়া কিউবার জন্ম দিয়েছে!
মুছে ফেলেছে মহামারী ক্ষুধার জঘণ্যতম নাম—
যে মন্ত্র
বিশ্ব কাঁপানো ইবলিশের কবল থেকে এনে দিয়েছে
মানুষের বাস্তুভিটার পবিত্র মাটি...

আজও তাঁর চোখে
অখন্ড জ্যোতির মতোন জ্বলছে মার্ক্স, এঙ্গেলস, লেনিন,
স্ট্যালিন, মাও সে তুং-এর দেখানো রক্তিম স্বপ্ন—

যে স্বপ্ন
এখনও ভারতবর্ষের বুকে অধরাই থেকে গেছে!
তবুও,
তাঁর চোখে জ্বলে থাকা শোষণ ধ্বংসের মারণ মন্ত্র—
অনুবাদ হচ্ছে অনেক বিদ্রোহী চোখের ভেতরে...


Wednesday, April 22, 2020

কবিতা


 
   
কবিতা

              সমস্ত যুবক যদি লেনিন হত
                                           — সুজন মন্ডল

আজ
ভারতবর্ষের সমস্ত যুবক যদি লেনিন হত!
তাহলে কেমন হতো...
হয়তো নিভে যেত বীভৎসময় খিদের আগুন...
হয়তো মুছে যেত দারিদ্র্যের কালসিটে দাগ...
হয়তো ভেঙে যেত শোষণময় সাম্রাজ্যের ইমারত—

আজ
ভারতবর্ষের সমস্ত যুবক যদি লেনিন হত!
তাহলে...
হয়তো রবীন্দ্র, নজরুল, শরৎচন্দ্রের
যোগ্যতম উত্তরসূরি হয়েই!
লিখে যেত শোষিত মানুষের দিনপঞ্জি—
হয়তো ভগৎ সিং, মাস্টারদা, বিবেকানন্দ,
সুভাষ বোসের বংশধর হয়েই!
করে যেত মনুবাদ-সংঘবাদ, বর্ণবাদকে ধ্বংস...

আজ
ভারতবর্ষের সমস্ত যুবক যদি লেনিন হত!
তাহলে...
চিন, রাশিয়া, কিউবার মতোই!
বিশ্বের ইতিহাসে লেখা থাকতো :
স্বর্ণাক্ষরে ভারতবর্ষের নাম...

আজ
ভারতবর্ষের সমস্ত যুবক যদি লেনিন হত!
তাহলে...
তাহলে বদলে যেত :
কয়েক লক্ষ বছরের নির্মম শাসনের ইতিহাস...

Monday, April 20, 2020




কবিতা :
             আজও  মানুষ হতে পারিনি
                                       — সুজন মন্ডল


আমরা আজও মানুষ হতে পারিনি—
আমরা আজও আদিম দানবের মতোই হিংস্র!
আমরা আজও জানোয়ারের মতোই বর্বর!
তাইতো মানুষেরই তাজা রক্তে—
মেটাই পিপাসা...

অথচ,
আমাদের মধ্যেই একমাত্র ছিল!
মা-নু-ষ  হওয়ার সমস্ত বৈশিষ্ট্য...

তবুও,
আমরা মানুষ না হয়ে, হয়ে ওঠেছি :
খুনী, ধর্ষক, সন্ত্রাসী—

























Sunday, April 19, 2020








ডারউইন স্মরণেঃ
                       — সুজন মন্ডল

চার্লস ডারউইন,
একটি সহজ সরল প্রশ্নের উত্তর বলুন—
কেন আপনি ব্রুনো, কোপারনিকাস,
গ্যালিলিও'কে মিশিয়ে দিয়েছেন রক্তে ?
একটি বিশেষ সত্য বলার জন্য!
.
চার্লস ডারউইন,
একটি সহজ সরল প্রশ্নের উত্তর বলুন!
কিভাবে হয়ে উঠেছিলেন?
বৈদগ্ধ্যপূর্ণ বৈজ্ঞানিক মননের অধিকারী!
যেখানে ছোট্ট একটি বালির কণাকেও;
যুক্তির কষ্টিপাথরে ঘসে দেখেছেন :
তার ভেতরে কতটুকু সত্যের আগুন আছে!
.
চার্লস ডারউইন,
একটি সহজ সরল প্রশ্নের উত্তর বলুন!
প্রকৃতিবিজ্ঞানী আলফ্রেড ওয়ালেস,
যখন বলেছিলেন :
"বিবর্তনের পদ্ধতিতে প্রাকৃতিক নির্বাচনের কথা"
তখন কি করে এতটুকু উদ্বেগ প্রকাশ না করেও?
দিয়েছিলেন নজীরবিহীনভাবে উন্নত মূল্যবোধের পরিচয়!
.
চার্লস ডারউইন,
একটি সহজ সরল প্রশ্নের উত্তর বলুন!
আপনি কি এমন আবিষ্কার করেছিলেন ?
যা আজও দেশে দেশে "ধর্মান্ধদের কোপে"—
উত্তর বলুন চার্লস ডারউইন...
উত্তর বলুন
বলুন উত্তর...











Saturday, April 18, 2020

কবিতা

                      এখন
                              — সুজন মন্ডল

এখন কোথাও 
ভাতের গন্ধ খুঁজে পায় না...
এখন তো 
শুধুই দেখতে পায়...
বিভূতি বাড়ুজ্যের, 
'অশনি সংকেতে'র :
দুর্ভিক্ষময় ছায়াছবি—
এখন তো 
শুধুই শুনতে পায়...
কাতারে কাতারে পরিযায়ী কঙ্কালের :
উত্থাপিত হাহাকার—

এখন তো 
সর্বগ্ৰাসী মন্বন্তরে ঘেরা!
ঘর বন্দিতে—
বুক ফাটা জলেই লিখে রাখছি!
পৃথিবীময় লাশের হিসাব—
তবুও, মাঝে মধ্যে গুটিকতক 
জীবন এসে...
গুলিয়ে দেয় হিসাবের মাথা—

এখন কোথাও
মানুষের চলাফেরার জন্য
নিরাপদ কোন রাস্তা নেই!
নেই কোন খাদ্য শস্যের জোগান—
এখন তো 
সর্বত্রই পুঁজি মন্থনে উত্থিত!
মারণ ভাইরাসের একাধিপত্য—

এখন কোথাও নেই
ঈশ্বর নামক বাস্তবিক কোন চরিত্র—
যে রোধ করবে এই বিপর্যয়কে...
এখন তো
বিজ্ঞানই শেষতম ভরসা...

------------------------------------------------------------------
সুজন মন্ডল, খিদিরপুর, বুনিয়াদপুর
দক্ষিণ দিনাজপুর, পশ্চিমবঙ্গ, ভারতবর্ষ ।।
18/04/2020....











কবিতা
                     নববর্ষ
                            — সুজন মন্ডল

আজ আমাদের ন-ব-ব-র্ষ!
হ্যাঁ, হ্যাঁ,
আজ আমাদের নববর্ষই বটে!

অথচ,
এই নববর্ষকে, কেউ কখনও চোখে দেখেনি!
শুনেনি পয়লা বৈশাখ,
কখনও বিধবার মতো হবিস্যি পালন করেছে!
এমনকি,
কেউ কখনও করেনি, কোন মিষ্টি মিষ্টান্ন ছাড়াই!
শুধুমাত্র অমায়িক খিদের জ্বালা—
আসমুদ্র হিমাচলের মতো দারিদ্র্য—
আর আবিস্কৃত কোন মহামারীর স্পর্শে—
সদলবলে হালখাতা...

আজ আমাদের ন-ব-ব-র্ষ!
যে নববর্ষ,
নিয়ে এসেছে মৃত্যুর উৎসব...
যে নববর্ষ,
বয়ে এনেছে ক্ষুধার ভাইরাস—
যে নববর্ষ,
শাঁখের বদলে বাজাচ্ছে কান্না—

কিন্তু,
এতকিছুর পরেও;
নববর্ষ এনেছে মৃত্যুর দেশ থেকে—
বেঁচে বর্তে থাকার, জীবন্ত এক ইস্তেহার...


Friday, April 17, 2020

Poem

শরৎচন্দ্রের প্রতি
----------------------- সুজন মন্ডল

শরৎচন্দ্র,
আপনি আজ জীবিত;
নেই বলেই—
আমাদের অব্যক্ত যন্ত্রণাগুলো;
এখন আর :
ঐ নাগরিক আকাশে ওড়ে না...
এমনকি,
আজকাল আপনার মতোন
তেমন করে;
কেউই লেখে না—
কলমের খোঁচাতে!
আমাদের অবর্ণনীয় দুঃখের :
কোন শ্লোক—

শরৎচন্দ্র,
আপনি আজ জীবিত;
নেই বলেই—
'রাজলক্ষ্মী', 'অভয়া',
'রমা', 'কমলে'র আত্মারা—
ডুকরে ডুকরে কাঁদে...
খুঁজে চলে—
মুক্তি পথের হদিস দেওয়া :
সেই পরম পুরুষকে...
যিনি 'বর্ণপরিচয়ে'র
আইনী ভাষাকে...
দিয়েছিল সহানুভূতির স্পর্শে :
সাহিত্যে জীবন্ত রূপ...

শরৎচন্দ্র,
আপনি আজ জীবিত;
নেই বলেই—
ধর্মের জঘণ্যতম মিথ্যেগুলো...
শঙ্কাহীন ভাবে :
শাসন করে যাচ্ছে বৈজ্ঞানিক সত্যকে—
এমনকি,
আদিম হিংস্রতাকেও—
হার মানিয়ে!
মিছিল করছে পৈশাচিক উল্লাসে—

শরৎচন্দ্র,
আপনি আজ জীবিত নেই—
তবুও,
'পথের দাবী'র 'সব্যসাচী'
পথ ভুলে যায়নি...
হয়তো,
সামান্যতম সময়ের জন্য;
হারিয়েছে সংগ্ৰামী বন্ধুদের...
কিন্তু, তাতে কি হয়েছে?
আবার খুঁজে নেবে—
নয়তো বা আপনার রেখে যাওয়া :
চিন্তায় নূতন করে গড়ে নেবে—
পুঁজি নামক মহামারীর :
মহা প্রতিষেধক হিসেবে...

Poem

কবিতা :
                       চার্লি চ্যাপলিন
                                    — সুজন মন্ডল

চার্লি চ্যাপলিন,
তোমাকে আজ বড্ড বেশি প্রয়োজন—
যে শ্বাসরোধকারী কুৎসিত
সময়ের শরীরে—
উদ্ধোধন করবে আবার রক্তিম শিল্পের শিলান্যাস...

চার্লি চ্যাপলিন,
তোমাকে আজ বড্ড বেশি প্রয়োজন—
যে অমানুষিক বর্বরতার
বীভৎসময় মিথ্যেগুলো!
মার্ক্সীয় শিল্পের, আশ্চর্য তরবারিতে ছিন্নভিন্ন করে!
জাগিয়ে তুলবে পুনরায়...
পুঁজিবাদের আঁচে ঝলসানো :
চামড়ার প্রলেপ দেওয়া লক্ষ লক্ষ কঙ্কালের মগজ!
যে মগজে ঘুমিয়ে আছে চেতনার প্রাণ...

চার্লি চ্যাপলিন,
তোমাকে আজ বড্ড বেশি প্রয়োজন—
যে এই অস্ত্রের দুর্ধর্ষ কাহিনী ছিঁড়ে!
এমনকি, সাম্রাজ্যবাদের ঘৃণ্যতম হুমকি পর্যন্ত
অবলীলায় উপেক্ষা করে—
ক্ষুধার আগুন নেভানোর মন্ত্র বলে যাবে...

চার্লি চ্যাপলিন,
তোমাকে আজ বড্ড বেশি প্রয়োজন—
যে এই বিবেক, মনুষ্যত্বহীন!
পশুর মতোন নিকৃষ্টতম শোষণের দেশে—
গেঁথে যাবে অনাগত বিপ্লবের সিঁড়ি...