ভারতবর্ষের মা
— সুজন মন্ডল
............................................................
কেউ শুনছ,
আমি যে ভারতবর্ষের মা বলছি,
মা-আ...
দ্যাখো আমার চোখে কত নদী ভাঙছে—
মুখে ফাটছে কত সাগরের গর্জন!
আমার নরম বুকের উপরে দৌড়াচ্ছে দ্যাখো
ক্ষুধা আর মহামারীর বীর্যে জন্মানো মৃত্যুর কাঁকড়া :
যেন অনবরত ছিঁড়ে খাচ্ছে আমার ছেলেমেয়েদের—
না, না, না
তোমরা ওভাবে ধুয়ে দিও না...
ট্রেনে পিষে যাওয়া, আমার সন্তানের রক্তে ভেজা বেদি!
ভুলেও অবেলায় ডেকোনা, আমার 'ইয়াকুবের বন্ধুকে—'
হাঁটতে হাঁটতে ওঁরা যে আজ বড়ই ক্লান্ত...
একি করছ,
না, না, না তোমরা আজ আর একদম বাইরে যেওনা!
শুনো নি তোমরা, আমার হতভাগিনী মেয়ে আজ
খোলা রাস্তার বিছানায় করেছে প্রসব :
মানবতার লজ্জা!
কেউ শুনছ,
আমি যে ভারতবর্ষের মা বলছি,
মা-আ...
দ্যাখো,
আমার এক একটি জোয়ান ছেলে চলে যাচ্ছে—
আমার বুকটা যে জলহীন মাটির মতন ফেটে যাচ্ছে!
তবুও, আমাদের বিদ্যাসাগর, নেতাজি, নজরুল,
বিবেকানন্দরা আজ আর তেমন করে জেগে ওঠে না...
কেউ শুনছ,
আমি যে ভারতবর্ষের মা বলছি,
মা-আ...
আমি যে আজ স্বামী হারিয়ে, ছেলে খুইয়ে,
মেয়েকে ভাসিয়ে—
সম্পুর্ন উলঙ্গ হয়ে ঘুরছি!
এখন তোমাদের মধ্যে কেউ আসুক,
অন্ততঃ
এ জমাট বাঁধা বিবেকের চোখে আটকে থাকা,
লজ্জার পতাকা খুলে!
আমাকে পড়িয়ে যাও, পড়িয়ে যাও...